শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
ভারতীয় ৪৪০ বোতল মদসহ পিকআপ ভ্যান আটক শ্রীবরদীতে তালা ভেঙ্গে পরীক্ষা নিলেন ইউএনও মাভাবিপ্রবিতে অপ্রীতিকর অবস্থায় পরকীয়া প্রেমিকের সাথে আটক দুই সন্তানের মা প্রার্থিতা স্থগিতের পর নতুন চমক, নাদিরা মিঠু বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কাস্তের আঘাতে কলেজছাত্রী জখম, অভিযুক্ত সজীব জনতার হাতে আটক ডিমলায় কৃষকদের মাঝে সার ও ধান বীজ বিতরণ দোয়ারাবাজার সীমান্তে চেলা নদীতে বালু উত্তোলনকালে মাটি চাপায় যুবক আহত মাদারীপুরে ২৪ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নিলেন শিক্ষার্থী চারঘাটে পৌরসভা মাস্টার প্ল্যান সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শকরণ সভা চারঘাটে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত লালপুরে ছেলের প্রতি অভিমান, মায়ের মর্মান্তিক আত্মহত্যা ঝিনাইদহে ৩ বছরের সাবার লাশ মিলল প্রতিবেশীর ঘরে সলিয়াবাকপুরে শ্রমিকদলের আয়োজনে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মোনাজাত কমলনগরে চকলেট ও টাকার লোভ দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা বাউফলে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের আগুনে পুড়ে গেল ঘর খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় পবিপ্রবি জিয়া পরিষদের মিলাদ ও দোয়া মাহফিল শিবচরে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘Career Path and Higher Education Expo-2025’ অনুষ্ঠিত শেরপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল ইসলামের নির্বাচনী আলোচনা সভা নাসির নগরে ০৮ বছরের এক শিশুকে ধর্ষনের পর হত্যার অভিযোগ

মধ্যনগরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ

জয়নাল আবেদীন জহিরুল, মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যনগর উপজেলার জনপদ মহিষখলা জায়গাটি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম শক্ত ঘাঁটি। ভারতের সীমান্তঘেঁষা ও চারদিকে হাওরবেষ্টিত দুর্গম এলাকা হওয়ায় এটি ছিল শত্রুপক্ষের জন্য প্রায় অপ্রবেশ্য অঞ্চল। ফলে মহিষখলা পরিণত হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও কৌশলগত পরিকল্পনার কেন্দ্রে।

তৎকালীন সময়ে মহিষখলা ছিল ১১ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর সাব-সেক্টরের আওতাধীন এলাকা। এখান থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা মধ্যনগর, ধর্মপাশা, নেত্রকোণা ও হালুয়াঘাট অঞ্চলে একাধিক সফল অভিযান পরিচালনা করেন। স্থানীয় জনগণ খাদ্য, আশ্রয় ও তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেন, যা মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলনকে আরও বেগবান করে তোলে।

মুক্তিযুদ্ধের সেই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ধরে রাখতে মহিষখলায় গড়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ—মহিষখলা স্মৃতিসৌধ।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু-র বিখ্যাত গান ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’–এর ভাবধারায় স্মৃতিসৌধটির নকশা করা হয়। স্থপতি রাজন দাসের নকশায় ২০১২ সালে মহিষখলা নদীর পূর্ব তীরে প্রায় ১৮ হাজার ৭০০ বর্গফুট জায়গাজুড়ে স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন।

সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের অর্থায়নে, প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন হিসেবে স্মৃতিসৌধটি এখন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল সংযোজন।

২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবসে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় এই স্মৃতিসৌধে। এরপর থেকে প্রতিবছর বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসে এখানে শহীদদের স্মরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

মধ্যনগরের স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন মহল মনে করেন, মহিষখলা শুধু একটি জনপদ নয়; এটি বীরত্ব, ত্যাগ ও স্বাধীনতার প্রতীক। মহিষখলা স্মৃতিসৌধকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পর্যটন, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। তারা স্মৃতিসৌধটির যথাযথ সংরক্ষণ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন।

এই প্রসঙ্গে মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল রায় বলেন, মহিষখলা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক গৌরবময় স্থান। এখানে নির্মিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মৃতিসৌধটি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের সাক্ষী। উপজেলা প্রশাসন এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটির সংরক্ষণ ও সৌন্দর্যবর্ধনে কাজ করছে, যাতে আগত দর্শনার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কাছ থেকে অনুভব করতে পারেন।

মহিষখলার এই স্মৃতিসৌধ আজ স্বাধীন বাংলাদেশের বীর সন্তানদের ত্যাগ ও সাহসিকতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে—মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অমলিন সাক্ষী হিসেবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩